





পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। ঢাকার দর্শকদের কাছেও জনপ্রিয় মুখ তিনি। টালিগঞ্জের






পর ঢালিউডেও এখন অভিনয় করছেন। গত বছর এদেশে তার অভিনীত ‘যদি একদিন’ মুক্তি পায়।






এখন তিনি শুটিং করছেন ‘বিক্ষোভ’ নামের আরও একটি ছবির। এফডিসিতে সমকালের মুখোমুখি হন তিনি-
দুই বছর হলো ঢাকায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। ঢাকার কোন বিষয়গুলো ভালো এবং মন্দ লাগছে?
মন্দ লাগা নেই; যা আছে পুরোটাই ভালো লাগা। এখন ঢাকা আর কলকাতা ভিন্ন কিছু মনে হয় না। ঢাকা এলেও মনে হয় বাসার পাশেই কোনো এক শহরে এসেছি। কলকাতা থেকে ঢাকায় যারা আসবেন তারা একটা কথার প্রশংসা না করে পারবেন না। সেটা এখানকার আতিথেয়তা। সবাই এত সহজে আপন করে নেয়; যা সত্যিই মুগ্ধ করে। ব্যক্তিগতভাবে আমিও জটিলতা পছন্দ করি না। জীবনকে সহজ-সরলভাবেই দেখতে চাই, চলতেও চাই। ঢাকার মানুষের মাঝে সরলতা বেশি।
ঢাকায় কাজ ছাড়া আসা হয় না। কাজের পারপাসে যেহেতু আসা, তাই সিনেমার বাইরে অন্য অঙ্গনের মানুষের সঙ্গে আমার ওঠাবসা হয় না। এ পর্যন্ত যাদের সঙ্গেই কাজ হয়েছে, তারা আমার সঙ্গে ভালো মনেই মিশেছে। আমাকে নিজেদের একজন ভেবেছে। তাদের আচার-আচরণে কখনও মনে হয়নি আমি অন্য দেশ থেকে এখানে কাজ করতে এসেছি। একজন শ্রাবন্তীকে যতটা শ্রদ্ধা ও সম্মান দেওয়ার দরকার তারা সেটা দিয়েছে। মনে হয়েছে আমি তাদের অনেক কাছের। বন্ধুর মতোই মিশেছেন সবাই।
‘ঢাকার মানুষ’ না ‘ঢাকার সিনেমার কাজ’ কোনটার প্রেমে পড়েছেন?
এ ক্ষেত্রে আমাকে বলতে হবে দুটোর প্রেমেই পড়েছি। প্রথমে কাজকে রাখতে হবে। আর এখানকার মানুষদের প্রতি ভালোবাসা, তাদের আতিথেয়তা ও ব্যবহারে মুগ্ধ না হলে হয়তো রেগুলার কাজ করাও হতো না।
শ্রাবন্তী
তাহলে বলা যেতে পারে বাংলাদেশের ছবিতে ক্যারিয়ারে ভিত্তিটা শক্ত হচ্ছে শ্রাবন্তীর?
ক্যারিয়ারের ভিত্তি শক্ত করতে তো এ দেশে কাজ করছি না। কাজ করছি গল্প পছন্দ হচ্ছে বলে। সেটা কলকাতার ছবি হোক আর ঢাকার ছবি। আমাকে যে কোনো ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলে আগে গল্প ও চরিত্র দেখি। দুটো পছন্দ হলে চোখ বন্ধ করে কাজে রাজি হয়ে যাই। গত বছর এখানে মুক্তি পেয়েছে ‘যদি একদিন’। তাহসান ও তাসকিনের সঙ্গে প্রথম অভিনয় করলাম। এমন গল্পের ছবিতে কাজ করে নিজের ভেতর এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করে। এখন ‘বিক্ষোভ’ ছবির কাজ করছি। এর গল্পও হার্ট টাচিং।
‘বিক্ষোভ’ ছবির কোন দিকটি সবচেয়ে বেশি টেনেছে আপনাকে?
এই ছবির বড় শক্তি গল্প। প্রথমবার একজন শিক্ষিকার চরিত্রে অভিনয় করছি। তাছাড়া এই ছবির উদ্দেশ্য জনগুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে এই ছবির গল্প। বাংলাদেশ-ভারত সব জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনা হয়। এই দুর্ঘটনার প্রতিকারে যে আন্দোলন, তা নিয়েই ছবিটি। ছবিতে আমি যে চরিত্রে অভিনয় করছি তার নাম আফ্রি।
তার জীবনে অনেক কষ্ট এসেছে কিন্তু থেমে থাকেননি। এগিয়ে গেছেন। লড়তে শিখেছেন। এটাই আমার ভালো লেগেছে। এমন একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ এলে আমার মনে হয় না কোনো অভিনয়শিল্পী হাতছাড়া করবেন।
ছবির নির্মাতা শামীম আহমেদ রনি ও নায়কও নতুন। তাদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা…
রনির সঙ্গে আমার প্রথম কাজ হলেও মনেই হয়নি তার সঙ্গে প্রথম কাজ করছি। তার আগের কাজগুলো দেখেছি আমি। এ দেশের সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গেও কাজ করছি। ভালো নির্মাতার পাশাপাশি ভালো মানুষও। আমরা প্রথম কাজ করেছি, কিন্তু কোনো সমস্যা হয়নি এখনও। সুন্দরভাবে অভিনয় করেছি। ছবির কাজের ফাঁকে চমৎকার আড্ডা হয়েছে। আগেরবার তো আমার স্বামী ও শাশুড়িকেও নিয়ে এসেছিলাম। সবাই মিলে খুব ইনজয় করেছি।
এর মাঝে বাংলাদেশের আর কোনো ছবিতে অভিনয়ের বিষয়ে কথা হয়েছে কী?
শুটিং করতে যে কয়বারই এসেছি, কোনো না কোনো ছবির প্রস্তাব পেয়েছি। সেটা এবারও। তবে হুট করেই তো আর কোনো একটি ছবিতে অভিনয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। গল্প-চরিত্র দেখতে হয়।
আগামীকাল কলকাতার সঙ্গে বাংলাদেশেও আপনার নতুন ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা…
হ্যাঁ। আগামীকাল কলকাতায় মুক্তি পাবে ‘হুল্লোড়’। শুনেছি একই দিন বাংলাদেশেও মুক্তি পাওয়ার কথা। পেলে ভালোই হবে। মন ভালো করে দেওয়ার মতো একটা ছবি। পুরোপুরি কমেডি ঘরানার ছবি। প্রচুর টেনশন ও কাজের চাপে থাকা মানুষের সবকিছু থেকে মুক্তি দিতে পারে এই ছবি। এর গানগুলো দারুণ।
যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘শিকারি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। ছবিটি দুই দেশের দর্শকরা বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে শাকিবের সঙ্গে আপনাকে…
‘শিকারি’ দারুণ ছবি হয়েছিল। ভালো ব্যবসাও করেছে। তবে আমি তো কোনো প্রযোজক বা পরিচালককে বলতে পারি না আমার বিপরীতে অমুক নায়ককে নেন। আমি নায়ক বাছাই করার কেউ না। প্রযোজক-পরিচালক তারা যাকে ভালো ভাবেন, তার বিপরীতে আমাকে নেন। তবে আমিও চাই শাকিবের সঙ্গে আমার আবারও কাজ হোক।
কলকাতায় এখন ভিন্নধারার গল্পের ছবিতে আপনাকে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে। তাহলে কি শ্রাবন্তীও কলকাতায় ঋতুপর্ণা ও জয়াদের পথে হাঁটছেন?
আমি অভিনয়শিল্পী। আমাকে অভিনয়ের পথেই হাঁটতে হয়। ভিন্নধারার গল্পে, না সাধারণ ধারার গল্পের, সেটা ভাবি না। যে চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পাচ্ছি, সে চরিত্রে কতটা সফলভাবে অভিনয় করতে পারছি সেটাই ভাবি আমি। দর্শক আমার চরিত্রটা কতটা গ্রহণ করবে তাও ভাবনায় থাকে। ছবিতে ভালো একটা চরিত্র খুঁজি। অভিনয়ের জায়গা খুঁজি। সেটা যে ধারার ছবিই হোক না কেন।